
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার কড়াইবাড়ি গ্রামে মাদক সংশ্লিষ্টতার জেরে নারীসহ একই পরিবারের চারজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন—রুবি বেগম (৫৮), তার ছেলে রাসেল (৩৫), মেয়ে জোনাকি আক্তার (২৭) এবং আরেক মেয়ে রুমা আক্তার। নিহত চারজনই একই পরিবারের সদস্য।
বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের একটি সন্ত্রাসী দল বৃহস্পতিবার সকালে রুবি বেগমের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়। প্রথমে লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে ও পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রুবি, রাসেল ও জোনাকিকে হত্যা করা হয়। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় রুমা আক্তারকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নিহত পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা ও অসামাজিক কার্যক্রমে জড়িত ছিল। এসব কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করে এলাকায় তাদের সঙ্গে বিভিন্ন পক্ষের বিরোধ চলছিল। পূর্ব বিরোধের জের ধরেই এই বর্বর হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নিহত রাসেলের স্ত্রী মোসাম্মৎ মিম দাবি করেছেন, সম্প্রতি মোবাইল চুরির একটি ঘটনা নিয়ে বিরোধের জেরেই তাদের পরিবারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
ঘটনার পর এলাকাজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার নাজির আহম্মদ খান। তিনি জানান, “আইন হাতে তুলে নিয়ে যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে অভিযুক্তদের শনাক্তে অভিযান শুরু হয়েছে।”
বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান জানান, ঘটনার পর থেকে এলাকায় পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং এলাকায় চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা চলছে।