কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানাধীন বলরামপুর এলাকার এক গৃহবধূকে হত্যাচেষ্টা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর আপন বড় ভাই ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর আনুমানিক ২টা ১০ মিনিটে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার শিকার ফরিদা আক্তার (৩৬) এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ফরিদা আক্তার বলরামপুর উত্তরপাড়ার বাসিন্দা। তার স্বামী আরিফুল ইসলামের নামে তার মা (ফরিদা শাশুড়ী) ২০২৩ সালে ১.৩৭৫ শতক জমি হেবা দলিলের মাধ্যমে প্রদান করেন। পরবর্তীতে নিরাপত্তার স্বার্থে ২০২৪ সালের ১২ মার্চ জমিটি স্বামী ফরিদা আক্তারের নামে হেবা দলিল করে দেন, যার খতিয়ান নম্বর ১৫৪৩।
অভিযোগে ফরিদা আক্তার উল্লেখ করেন, সম্পত্তিতে তারা অনেক কষ্ট করে দুইতলা ভবন নির্মাণ করেন। চার মাস আগে অভিযুক্ত মাসুদ রানা (৫০) তার স্ত্রী পারভিন আক্তার (৪২) ও কন্যা মাকসুদা আক্তার কান্তা (২৫) ওই বাড়ির নিচতলায় ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকার অনুরোধ করলে তিনি রাজি না হলেও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অনুরোধে মাসিক ১ হাজার টাকা ভাড়ায় থাকার অনুমতি দেন।
কিন্তু ভাড়া নেওয়ার পর থেকেই অভিযুক্তরা বাড়ির পুরো সম্পত্তি দখলের পাঁয়তারা শুরু করেন। প্রায় প্রতিদিনই গালিগালাজ, হুমকি, ঝগড়া ও জানালার গ্রিল ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছিল বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন ফরিদা আক্তার। এমনকি স্থানীয়ভাবে সালিশি মীমাংসার চেষ্টা করলেও অভিযুক্তরা সেখানে অংশ না নিয়ে উল্টো অশোভন আচরণ করে।
ঘটনার দিন, ফরিদা আক্তার সিঁড়ি পরিষ্কার করার সময় অভিযুক্ত পারভিন আক্তার বাধা দিলে দু’পক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে মাসুদ রানা, পারভিন আক্তার, মাকসুদা আক্তাসহ অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জন একত্রিত হয়ে ফরিদা আক্তারকে কিল-ঘুষি, থাপ্পড় ও লাথি মারেন। অভিযোগে বলা হয়, মাসুদ রানা ইট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করলে তার শাশুড়ি বাধা দিয়ে প্রাণ রক্ষা করেন। তলপেটে একাধিক লাথি মারায় ফরিদা গুরুতর আহত হন।
আতঙ্কিত ফরিদা আক্তার ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং তিনি প্রাণে রক্ষা পান। অভিযুক্তরা বিদায়ের সময় প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বলেন, তারা ফরিদা ও তার স্বামীকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে।
এই ঘটনার ভিডিও প্রমাণ সিসিটিভিতে সংরক্ষিত আছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফরিদা আক্তার আরও জানান, অভিযুক্তদের লোভ ও পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের কারণে তার পরিবার বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) মহিনুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “অভিযোগটি পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
© www.newsnewstbd.com
নিউজনেস্ট