
নিজস্ব প্রতিবেদক//
কুমিল্লায় অটোরিকশা চালক পরাণ হত্যাকাণ্ডের মূলহোতাসহ ছিনতাইকারী চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান অটোরিকশার যন্ত্রাংশসহ ৭টি অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন- সদর দক্ষিণ উপজেলার শাকতলা এলাকার মোঃ আবদুল হাকিমের ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম জাবেদ (২৬), শাকতলা উত্তরপাড়া এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো. রুবেল (২৮), মহিচাইল ইউনিয়নের অম্বরপুর এলাকার মো. আব্দুল রবের ছেলে মোঃ শরীফ (২৫), চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকার মৃত আরব রহমানের ছেলে মোঃ আমির হোসেন (৩২), একই এলাকার মৃত সুরুজ মিয়ার ছেলে মো. সোহাগ হোসেন (২৫)।
পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান জানান, গত ১৭ মে (শুক্রবার) কুমিল্লা নগরীর টিক্কারচর এলাকার বাসিন্দা অটোরিক্সা ড্রাইভার পরান অটোরিক্সাসহ সন্ধ্যায় ০৬.০০টায় নিখোঁজ হয়।
পরবর্তীতে ময়নামতি হাইওয়ে থানাধীন, পুলিশ কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানাধীন হারাতলী এলাকায় মহাসড়কে পিষ্ট অবস্থায় একটি মৃতদেহ উদ্ধার করে। উক্ত মৃতদেহটি অটোরিক্সাচালক পরানের যাহা ফিঙ্গারপ্রিন্ট পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া যায়।
এই ঘটনায় পরাণের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন।
এই মামলার সূত্র ধরে জেলা পুলিশ সুপারের সার্বিক নির্দেশনায় ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল এর তত্ত্বাবধানে উক্ত চক্রটিকে গ্রেফতার করতে কোতোয়ালি মডেল থানা ও জেলা ডিবির সমন্বয়ে একটি বিশেষ টিম কাজ শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় উক্ত টিম পরান হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের আটক করতে সক্ষম হয়।
পরান হত্যাকাণ্ডে জড়িত জাবেদকে গত ২৭ মে কুমিল্লা নগরীর গোবিন্দপুর এলাকা হতে গ্রেফতার করে।
জাবেদের দেওয়া তথ্যমতে আরও ২ আসামি শরীফ, রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়। পরে, চৌদ্দগ্রাম থানার শুভপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আমির হোসেন এর গ্যারেজে অভিযান চালিয়ে ৭টি অটোরিকশা, ৪টি অটোরিকশার ব্যাটারী এবং বেশ কিছু অটোরিকশার যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়।
গ্যারেজ মালিক আমির হোসেন এবং তার সহযোগী সোহাগ মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ চোরাই অটোরিক্সা কিনে তাৎক্ষণিকভাবে রং সহ নানা রকম পরিবর্তন ঘটিয়ে অন্যত্র বিক্রয় করে আসছে। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ সন্ধ্যায় মহানগরীসহ আশপাশের এলাকা হতে সুকৌশলে অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে থাকে। একপর্যায়ে সুকৌশলে অটোরিকশার ড্রাইভারকে বিশেষ উপায়ে তৈরী চেতনানাশক মিশ্রিত বিস্কুট/কোমলপানীয় খাইয়ে মহাসড়কে ড্রাইভারকে ফেলে রেখে অটোরিক্সাটি নিয়ে চলে যায়। এক্ষেত্রে চেতনাহীন ড্রাইভার মহাসড়কে ভারী যানবাহনে পিষ্ট হয়ে মৃত্যুবরন করে। জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত চক্রটি বেশ কয়েকটি ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
জেলা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান জানান পুরো চক্রের অন্যান্য সদস্যদের সনাক্তকরণ এবং গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) খন্দকার আশফাকুজ্জামান, কুমিল্লা কোতওয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ হোসেন, সদর সার্কেল কামরান হোসেন, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ রাজেশ বড়ুয়াসহ প্রমুখ।