গত ০৩ আগস্ট ২০২৪ তারিখ কুমিল্লা পুলিশ লাইন উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে অতর্কিত ছাত্র-জনতার ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনায় আওয়ামীলীগের সক্রিয় ২ সদস্য গ্রেফতার করেছে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ।
আটককৃতরা হলো ১। কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী মডেল থানার , মধ্য রেইসকোর্স চৌধুরী প্যালেস, ০৩নং ওয়ার্ড কুসিক , আবদুল মতিন চৌধুরীর ছেলে এআর চৌধুরী প্রকাশ শ্যামল(৪৭),(পদবী-আওয়ামী লীগের স্বক্রিয় সদস্য), ২। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার, ০৭নং ওয়ার্ড চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা, বৈদ্দারখিল এলাকার মৃত বাচ্চু মিয়ার ছেলে মোঃ সাইফুল ইসলাম প্রকাশ শাহিন কমিশনার(৪০)।
আদালত সূত্রে জানাযায় যে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যথাযথ বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ প্রহরায় আদালতে প্রেরণ করেন।
সূত্রঃ- কুমিল্লা এর কোতয়ালী মডেল থানার ,এফআইআর নং-৩০, তারিখ-১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫; জি আর নং-১০৪, তারিখ-১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫; সময়-খ্রিঃ তারিখ ০২.৪৫ ঘটিকা ধারা-১৫(৩)/২৫(ফ) বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১৯৭৪; তৎসহ ১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩৪১/৩২৩/৩২৪/ ৩২৫/৩২৬/৩০৭/১০৯/১১৪/৩৪ ঞযব চবহধষ ঈড়ফব, ১৮৬০; তৎসহ ৩/৪ ঞযব ঊীঢ়ষড়ংরাব ঝঁনংঃধহপবং অপঃ, ১৯০৮;
তিনি আসামীদের সোপর্দকালে প্রতিবেদন দাখিল করেন যে,
যথাবিহীত সম্মান পূর্বক বিনীত নিবেদন এই যে, আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী ফিরোজ হুসাইন, সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র), কোতয়ালী মডেল থানা, কুমিল্লা। সূত্রে উল্লেখিত মামলার এজাহার নামীয় গ্রেফতারকৃত আসামী ১। এআর চৌধুরী প্রকাশ শ্যামল(৪৭),(পদবী-আওয়ামী লীগের স্বক্রিয় সদস্য) পিতা-আবদুল মতিন চৌধুরী, মাতা-সুরাইয়া বেগম, সাং-মধ্য রেইসকোর্স চৌধুরী প্যালেস, ০৩নং ওয়ার্ড কুসিক, থানা- কোতয়ালী মডেল, জেলা-কুমিল্লা, সূত্রে উল্লেখিত মামলার ঘটনার সহিত জড়িত তদন্তে গ্রেফতারকৃত আসামী ২। মোঃ সাইফুল ইসলাম প্রকাশ শাহিন কমিশনার(৪০) (০৭নং ওয়ার্ড চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার কাউন্সিলর),পিতা-মৃত বাচ্চু মিয়া,সাং-বৈদ্দারখিল, ০৭নং ওয়ার্ড চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা, থানা-চৌদ্দগ্রাম, জেলা-কুমিল্লাদ্বয়কে যথাযথ পুলিশ প্রহরায় বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন পূর্বক এই প্রতিবেদন দাখিল করছি যে, উক্ত আসামীদ্বয় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর সক্রিয় সদস্য বলে জানা যায়। বৈষম্য বিরোধীয় আন্দোলনের কর্মসূচী চলাকালে আওয়ামী ফ্যাসিষ্ট সরকারের মদদপুষ্ট সকল উল্লেখিত আসামীসহ অপরাপর আসামীগণ পরষ্পর যোগসাজশে বেআইনী জনতায় দলবদ্ধ হইয়া তাদের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী একই উদ্দেশ্যে আসামীগন তাদের হাতে রিভলবার, শর্টগান পিস্তল, ককটেল, রামদা, লাঠিসহ দেশীয় এবং বিদেশী অস্ত্রে সজ্জিত হইয়া হত্যা, দাঙ্গা, ত্রাস, জনমনে আতংকিত বা গুরুতর আঘাত সংগঠনের উদ্দেশ্যে নিরীহ নিরস্ত্র ছাত্র জনতার উপর উদ্দেশ্যে প্রনোদিতভাবে ঘটনার দিন তারিখ ও সময় অর্থাৎ গত-০৩/০৮/২০২৪খ্রিঃ রোজ শনিবার ১২.০০ ঘটিকার সময় মামলার ঘটনাস্থল তথা কোতয়ালী মডেল থানাধীন কুমিল্লা পুলিশ লাইন উচ্চ বিদ্যালয় গেইটের সামনে রাস্তার উপর ছাত্র জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিল বাহির করলে ০১ থেকে ০৫নং আসামীর হুকুমে ও পরিকল্পনায় এবং ০৬ থেকে ১২নং আসামীর অর্থ ও অস্ত্র যোগানের মাধ্যমে উল্লেখিত আসামীদ্বয়সহ এজাহার নামীয় অপরাপর আসামীগন ও অজ্ঞাতনামা আসামীগন ছাত্র জনতাকে লক্ষ্য করে ককটেল বিষ্ফোরনসহ এলোপাথারী গুলি ছোড়ে। এতে করে উল্লেখিত সাক্ষীগন সহ ২৫-৩০ জনের বুকে, চোখে, নাকে, মাথায়সহ সমস্ত শরীরে গুলিবিদ্ধ করিয়া মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ছাত জনতা গুরুতর জখম এবং ভীত সন্ত্রস্ত্র হইয়া প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় নেওয়ার জন্য কোতয়ালী মডেল থানাধীন বিভিন্ন দিকে যাওয়া মাত্র আসামী ফয়েজ আহাম্মদ ভুলু ও আসামী খোরশেদ আলম, গোলাম জিলানী ভুলু তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে অতর্কিতভাবে ককটেল বিষ্ফোরন ঘটিয়ে জনমনে আতংকিত করিয়া গুলি ছুড়লে ছাত্র জনতার মধ্য হইতে উল্লেখিত সাক্ষীগনসহ অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়। এতে করে আরফান মজুমদারের পিঠে ৪০ থেকে ৫০টি স্প্রিন্টার বিদ্ধ হয়। আসামী মোস্তাফিজুর রহমান লিটন, জাহাঙ্গীর আলম ভূইয়া, জাকির হোসেন, মজিবুর রহমান, মহিউদ্দিন, আবদুল মমিন, ফেরদৌস, বিপ্লব চন্দ্র দাস, আশফাক উদ্দিন ঝুটন, রেজা ই এলাহি, সালে আহমেদ রাসেলের নেতৃত্বে ছাত্রজনতার উপর অস্ত্র নিয়া হামলা করলে মিজানুর রহমানসহ অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়। মিজানুর রহমানের পেটে, পা ও বুকে, মুখে গুলিবিদ্ধ হয়। আসামী শাহদাৎ হোসেন রিয়াদ, আজিজুল হক অপু, প্রিতুল রায়, আবু, আনিসুর রহমান এর নেতৃত্বে এলোপাথারী লাঠি, হকিষ্টিক দিয়ে পিটিয়ে ছাত্রজনতাকে রক্তাক্ত জখম করে। এতে সায়মন ইসলামসহ অনেকে আহত হয়। সাইমন ইসলামের হাতে আসামীদের ছোড়া ইটে গুরুতর জখম হয়। এমতাবস্থায় ছাত্রজনতা প্রাননাশের ভয়ে ভীত হয়ে ছোটাছুটি করার সময় আসামী বোরহান উদ্দিন মাহমুদ, জহিরুল কামাল, বাবুল পাল, আবুল হোসেন ছোটন, কাজী রফিকুল ইসলাম বাবুল, ফরিদ আহাম্মেদ, মারুফ হোসেন, মাহাবুর রহমান, জহির মিয়া, সিরাজুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম ভূইয়া, জিয়াউল হাসান সোহাগ, এ.এম.এম মঈন, জাকির হোসেন, আবদুল আলী, মাহবুবুর রহমান রিমন, ফয়েজ আহমেদ খান, আবু সাঈদ বাচ্চু, আবির ইসলাম আশিক, মনছুরুল হক মুন্সী, মোঃ মিনহাজ হুছাইন, আজমাইন ইকবাল খানসহ অজ্ঞাতনামা ১৫০/২০০ জন আসামী এলোপাথারী গুলি ও ককটেল বিষ্ফোরন করে এবং ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতাকে গুরুতর জখম ও গুলিবিদ্ধ করে অন্যান্য সকল আসামীগণ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিরস্ত্র ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বেধরক পিটাইয়া ও মেরে অনেকের হাঁড়ভাঙ্গা, নীলাফুলা বেদনাদায়ক জখম করে। আন্দোলনে ছাত্র-জনতা শোর-চিৎকারে এলাকাবাসীসহ কতেক সাক্ষী ঘটনাস্থলে আসিয়া নিরস্ত্র ছাত্র-ছাত্রীদেরকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করিতে চাইলে আসামীগণ বাঁধার সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে বাদী উক্ত বিষয়ে থানায় এজাহার দায়ের করিলে সূত্রোক্ত মামলা রুজু হয়।থানায় মামলা রুজু হওয়ার পর বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত ও সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করিয়া সোপর্দকৃত আসামীকে ০১/০৬/২০২৫খ্রিঃ তারিখ রাত ০৯:৩০ ঘটিকার সময় কোতয়ালী মডেল থানাধীন রেইসকোর্স এলাকা হইতে থানা পুলিশের সহায়তায়, সোপর্দকৃত ২নং আসামীকে ০১/০৬/২০২৫ইং তারিখ ০৫:৩০ ঘটিকার সময় কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানাধীন চৌদ্দগ্রাম বাজার হইতে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের সহায়তায় গ্রেফতার করা হয়।আসামীদ্বয়কে গ্রেফতার পরবর্তী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত আসামীদ্বয় তাদের উপরোক্ত নাম ঠিকানা প্রকাশ করাসহ উক্ত আসামীদ্বয় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর সক্রিয় সদস্য বলে জানায়। আমার প্রাথমিক তদন্তকালে ধৃত আসামীদ্বয় সূত্রোক্ত মামলার ঘটনার সহিত জড়িত থাকার বিষয়ে যথেষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যাইতেছে। মামলাটি তদন্তাধীন আছে। আসামীদ্বয় জামিনে মুক্তি পাইলে চিরতরে পলাতক সহ একই অপরাধের সহিত জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা বিদ্যমান রয়েছে বিধায় মামলার তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত আসামীদ্বয়কে জেল হাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন। আসামীদ্বয়কে গ্রেফতারের সংবাদ পেয়ে আসামীদ্বয়ের অভিভাবকসহ আত্মীয়, স্বজনরা থানায় আসিয়া আসামীদ্বয়ের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করাসহ আসামীদ্বয়কে সনাক্ত পূর্বক আসামীদ্বয়ের উল্লিখিত নাম,ঠিকানা প্রকাশ করেন। আসামীদ্বয়কে তাহাদের নিজ নিজ নামীয় জাতীয় পরিচয়পত্র/ জন্মনিবন্ধন দেখাইতে বললে সোপর্দকৃত আসামীদ্বয় তাৎক্ষনিক ভাবে তা আমার নিকট উপস্থাপন করতে পারে নাই। তদন্তকালে সোপর্দকৃত আসামীদ্বয়ের জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্মনিবন্ধন সংগ্রহ করা হবে। থানার রেকর্ডপত্র ও সিডিএমএস যাচাই করিয়া সোপর্দকৃত ১নং আসামীর বিরুদ্ধে ১। (৫২৮ঋ৫) কুমিল্লা এর কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার ,এফআইআর নং-২৯, তারিখ- ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪; জি আর নং-৩৪৯, তারিখ- ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪; সময়- ০০.২০ ঘটিকা ধারা- ১৪৩/৩২৩/৩০৭/১১৪/১০৯ ঞযব চবহধষ ঈড়ফব, ১৮৬০; তৎসহ ৩/৪ ঞযব ঊীঢ়ষড়ংরাব ঝঁনংঃধহপবং অপঃ, ১৯০৮; পাওয়া যায়।

অতএব, মহোদয় মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে তদন্তকাজ ও বিচারকাজ সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সোপর্দকৃত আসামীকে জেলহাজতে আটক রাখতে বিজ্ঞ আদালতের সদয় মর্জি হয়।