মঙ্গলবার , ৯ জুলাই ২০২৪ | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কোটাবিরোধী আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

ঢাকা আউটলুক ডেস্ক :
জুলাই ৯, ২০২৪ ১:২২ পূর্বাহ্ণ
পঠিত: ১৪৮ বার

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি শেষ করে সরকারকে তিন দিনের সময় বেধে দিয়েছেন। রাতে শাহবাগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে এ সময় দেওয়া হয়। পাশাপাশি আগামীকাল মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দেশব্যাপী ছাত্র ধর্মঘট এবং ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান তারা।

আন্দোলনকারীরা জানান, মঙ্গলবার ব্লকেড কর্মসূচি থাকবে না। ছাত্র ধর্মঘট এবং ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করা হবে। বেধে দেওয়া সময়ে দাবি আদায় না হলে আরো কঠোর কর্মসূচি দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

রাত সোয়া ৮টার দিকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আগামীকাল রাস্তা ব্লকেডের আওতামুক্ত থাকবে। আগামী বুধবার ৬৪ জেলায় কঠোর কর্মসূচির প্রস্তুতির জন্য মঙ্গলবার সারা দেশের প্রতিনিধি বৈঠক এবং অনলাইনে-অফলাইনে গণসংযোগ করা হবে। মঙ্গলবার বিকেলে অনলাইন ব্রিফিংয়ে আমরা কর্মসূচি ঘোষণা করব। তবে ছাত্র ধর্মঘট ও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি চলবেই।

তিনি বলেন, গত মাসে হাইকোর্টের রায়ের পর থেকেই আমরা আন্দোলন করে আসছি। বহুদিন ধরে আমাদের আন্দোলন চলমান। আমরা আজ হুট করেই শাহবাগে চলে আসিনি। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবেই আমাদের কর্মসূচি শুরু করেছি। অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছেও আমরা আমাদের স্মারকলিপি নিয়ে গিয়েছি। সব ধরনের ফর্মালিটিই আমরা মেইনটেইন করেছি, কিন্তু কাজ হয়নি। বাধ্য হয়েই আমাদের এই ধরনের অবরোধ কর্মসূচি দিতে হয়েছে। সরকার হয়তো ভেবেছিল কয়েকদিন পার হলেই আমরা ক্লান্ত হয়ে যাব, আমাদের মনোবল ভেঙে যাবে এবং আমরা রাজপথ ছেড়ে দেব। কিন্তু, আমরা আজ প্রমাণ করে দিয়েছি, সরকারের এই ধারণা ভুল। আমরা ক্লান্ত হয়েছি, এটা সত্য। কিন্তু আমাদের উপস্থিতি কমেনি। সরকারের কাছে আহ্বান থাকবে, আপনারা দায়িত্বশীল আচরণ করুন এবং দায়িত্বশীল বক্তব্য দিন। যদি এর ব্যত্যয় ঘটে তাহলে আমরা এর চেয়েও কঠিন কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।

আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে আহত হয়েছি। গতকাল আমরা এক দফা কর্মসূচিতে গিয়েছি। আমাদের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিয়েন না, আমরা আবার আমাদের এক দফা দাবি আবার পূনব্যক্ত করছি- সকল গ্রেডে অযৌক্তিক এবং বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাশ করে কোটাপদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, যারা আপনারা দায়িত্বপ্রাপ্ত রয়েছেন, তারা পানি ঘোলা করছেন। এমন সিদ্ধান্ত ছাত্র সমাজে একধরনের নেতিবাচক বার্তা দেয় এবং আমরা আশাহত হই। আমরা পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে চাই। শেষ বারে মতো বলে দিচ্ছি অতিসত্ত্বর আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করুন, অন্যথায় আরও কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো আমরা। যার ফলাফল হবে ভয়াবহ।

আবু বাকের মজুমদার নামে একজন বলেন, আজকে মন্ত্রীপরিষদের বৈঠক ছিল, সেখানে বলা হয়েছে হাইকোর্টের রায় চূড়ান্ত। আমরা এই রায় মানি না। আমরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলনে নেমেছি, যতক্ষণ না পর্যন্ত আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না করা হচ্ছে আমরা আন্দোলন থেকে পড়ার টেবিলে ফিরছি না।

সারজিস আলম বলেন, ৭১ এর পরে ’২৪ সালে মনে হয় বাংলাদেশে আরেকটি পুনর্জন্ম প্রয়োজন। ’৫২, ’৬২, ’৬৬, ’৭১, ’৯০ সাত দিনে ফলাফল আসেনি। কিছু মানুষ আমাদের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিচ্ছি। শিক্ষামন্ত্রীকে প্রশ্ন করতে চাই, তিনি বলেছেন হাইকোর্ট যা বলেছে তাই হবে। তাকে আমরা বলতে চাই কোটার প্রতি এত দরদ কেন। যেই স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি, একটি উন্নত সোনার বাংলাদেশ গড়তে মেধাবীদের হাতে বাংলাদেশ ছেড়ে দিতে হবে। আজকে শুধু ঢাকা শহরসহ দেশের ৪০টি জেলা ব্লকেড করা হয়েছে। দুইদিনের মধ্যে ৬৪টি জেলা কীভাবে ব্লকেড করতে হয়, তা ছাত্রসমাজ জানে। আমরা তিন দিনের সময় দিচ্ছি, আমাদের যে দাবি তা পূরণের জন্য যা করার তাই করুন। অন্যথায় ছাত্র সমাজের জানা আছে কীভাবে দাবি আদায় করে নিতে হয়।

এর আগে সন্ধ্যায় কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্ট ছেড়ে দিয়ে জড়ো হন শাহবাগে। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পরে থেকে তারা ব্লকেড ছেড়ে দিতে শুরু করেন।

প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধের পর রাজধানীর গুলিস্তানে জিরো পয়েন্ট মোড় ছেড়ে দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। তারা সরে যাওয়ার পর এই এলাকার যান চলাচল ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

এর আগে সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টা নাগাদ জিরো পয়েন্টে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর জিরো পয়েন্ট ছেড়ে দেন শিক্ষার্থীরা।

বাংলা ব্লকেডের দ্বিতীয় দিনে বিকেল পৌনে ৪টা থেকে সায়েন্সল্যাবে রাস্তায় অবস্থান করে অবরোধ পালন করেন সাত কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটের দিকে অবরোধ শেষ করেন তারা। দাবি আদায় না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে রাজপথ ছাড়েন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

এসময় ঢাকা কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বলেন, যতদিন না পর্যন্ত আমাদের দাবি আদায় না হবে ততদিন আমাদের লাগাতার কর্মসূচি চলবে। আগামী কর্মসূচিতেও ঢাকা কলেজ ইডেন কলেজসহ সাত কলেজ রাজপথে থাকবে। আগামীতে যেকোনও বড় ধরনের কর্মসূচি দিতে ছাত্রসমাজ প্রস্তুত আছে।

পরবর্তীতে আলোচনা সাপেক্ষে আমাদের আগামী দিনের কর্মসূচি আমরা আপনাদের জানিয়ে দেবো, যুক্ত করেন নাজমুল হাসান।

ঘোষণা শেষে তারা সাইন্সল্যাব মোড় থেকে মিছিল নিয়ে নীলক্ষেত মোড়ে গিয়ে তাদের আজকের কর্মসূচির সমাপ্তি করেন।

এর আগে, কোটা সংস্কার ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের জন্য ২০১৮ সালের সরকারি পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গত ৫ জুন হাইকোর্ট ২০১৮ সালের পরিপত্রের আংশিক অবৈধ ঘোষণা করার পর আবার এই আন্দোলন শুরু হয়। এটি বাতিলের দাবিতে আজ রবিবার (৭ জুলাই) বিকালে সারা দেশে সড়ক-মহাসড়ক অবরোধের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শাহবাগ মোড়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নির্ধারিত হওয়া এই কর্মসূচির নাম দিয়েছেন ‘বাংলা ব্লকেড’।

সূত্র কালবেলা সংস্করন

 

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।

সর্বশেষ - সারাদেশ

আপনার জন্য নির্বাচিত

ছাত্র আন্দোলনে আঃ লীগ নেতা হারুনুর রশিদ বাবুলকে ০২ মামলায় গ্রেফতার দেখানো নিয়ে গুঞ্জন

কুমিল্লায় বুড়িচংথানাধীন ৩২ কেজি গাঁজাসহ মাদকব্যবসায়ী আটক : ১

চাঁদা না পেয়ে মুরগী দোকানে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ সাবেক ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে

কুষ্টিয়া-৪ আসনের সাবেক এমপি আব্দুর রউফ গ্রেপ্তার

কুমিল্লা মনোহরগঞ্জে যুবদল কর্মীসভা অনুষ্ঠিত

আওয়ামী লীগের সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ রংপুরে গ্রেফতার

কুমিল্লা লুট হওয়া ২৮টি অস্ত্র ও ৬৬৭ টি গুলি উদ্ধার

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে পাশের হার ৭১ দশমিক ১৫ শতাংশ, ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা এগিয়ে

এসপি’র বখড়া আদায়ে সুনামগঞ্জের সীমান্তে অভিনব ‘ঘাট ম্যান’ নিয়োগ

চৌদ্দগ্রামে এস.এস.সি সমমানের পরিক্ষা কেন্দ্রের পাশে দোকান খোলা রাখায় জরিমানা