
গ্যাস হরিলুটের অপকর্মটি আবার শুরু হয়েছে বসুন্ধরায়। রাজধানীর বারিধারাস্থ বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় দিন-রাত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২১ ঘণ্টাই গ্যাস উধাও থাকছে। রাত আড়াইটা থেকে ভোর সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত গ্যাসের চমৎকার সরবরাহ মিলছে। শেষ রাতের ওই গ্যাস সরবরাহ দিয়ে সেখানকার বাসিন্দারা কি করবেন তা ভেবে পান না। বাকি সময়ে একবারের জন্যও বিন্দুমাত্র গ্যাস দেখতে পান তারা।
বছরের পর বছর ধরে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বসবাসরত কয়েক লাখ বাসিন্দা গ্যাস নিয়ে ভয়ংকর এ যন্ত্রণা পোহালেও তার কোনো প্রতিকার মেলে না। তবে গত ৫ আগস্ট থেকে হঠাৎ করেই গ্যাস সমস্যার ম্যাজিক্যাল সমাধান ঘটে। ওই সময় থেকে একটানা প্রায় পাঁচ মাস যাবত গ্যাস সরবরাহে কোনোরকম বিভ্রাট ঘটেনি, রাত দিন ২৪ ঘণ্টা পর্যাপ্ত গ্যাস পেতেন বাসা বাড়ির ব্যবহারকারীরা।
কীভাবে সম্ভব? হ্যাঁ সেই সম্ভবের কাহিনিই শোনা গেল বিশেষ একটি সূত্রে।
গ্যাস সেক্টরের সাবেক এক কর্মচারীর ভাষ্য হচ্ছে, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এলপি গ্যাসের গুদামখানাকে ঘিরে অদূরেই গ্যাস রিফিলের অবৈধ কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে অতিসংগোপনে। তিতাসের সার্ভিস লাইনের সঙ্গে পাইপের সংযোগ ঘটিয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মেশিনের সাহায্যে সরবরাহকৃত গ্যাস টেনে নেওয়া হয় কারখানায়। ফলে তিতাসের মূল সরবরাহ লাইন গলিয়ে একবিন্দু গ্যাসও এদিক সেদিক যাওয়ার সুযোগ থাকে না। বিষয়টি তিতাসের ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলীদের নজর এড়াতে ভোররাতে মাত্র তিন ঘণ্টার জন্য সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। ভয়ংকর এই গ্যাস লুটপাট ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত রয়েছেন তিতাসের কুড়িল কার্যালয়ের একজন ডিজিএম। গোপন চুক্তির অংশ হিসেবে প্রতি মাসে বসুন্ধরা থেকে মাত্র দশ লাখ টাকা সম্মানী পেয়ে থাকেন তিনি। এছাড়াও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যবহারের জন্য ৪৭ লাখ টাকা দামের অভিজাত গাড়ি কিনেও উপহার দিয়েছে বসুন্ধরা।
তবে বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থী বিপ্লবের সফলতায় ৫ আগস্ট হামলার শংকায় তটস্থ হয়ে উঠে বসুন্ধরা গ্রুপ। ওই রাতেই গ্যাস রিফিল কারখানার সাথে সংযুক্ত থাকা গ্যাস সংযোগ লাইন বিচ্ছিন্ন করে কারখানার রিফিল করার কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে একটানা প্রায় ৫ মাস যাবত গোটা এলাকায় গ্যাস সরবরাহ কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকে। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ যাবত পুনরায় অবৈধ রিফিল কারখানাটি সচল হওয়ায় আবার আগের মতো গ্যাস সংকটের ভয়াবহতা শুরুর গুরুতর অভিযোগ উঠেছে